ঢাকা ১০:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ ::
আমাদের নিউজপোর্টালে আপনাকে স্বাগতম...

বাজবেনা আর হর্ন, শব্দদূষণ-মুক্ত হচ্ছে রাজধানী

রাজধানীতে যান চলাচলে নতুন নিয়ন্ত্রণ আসছে শীঘ্রই। চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকেই যানবাহনে হর্ন বাজানোর উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এবিষয়ে এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিশেষ বিভাগ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রথমে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে, এবং পর্যায়ক্রমে পুরো ঢাকা শহর এবং ধীরে ধীরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও শব্দদূষণ বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

হর্ন বাজানোর নিয়ন্ত্রণে বিধিতেও পরিবর্তন নিয়ে আসা হবে জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গণমাধ্যমকে জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে পরের বছরের শুরুতে পুরো ঢাকা শহরকে নীরব এলাকা করতে কর্মসূচি নেওয়া হবে। প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে, পরে পুরো ঢাকা শহর এবং ধীরে ধীরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও শব্দদূষণ বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

রিজওয়ানা বলেন, হর্ন বাজানোর দীর্ঘদিনের অভ্যাস পরিবর্তন করতে প্রথমে মানুষকে সচেতন করা প্রয়োজন। এরপর আইনের প্রয়োগ। হর্ন বাজানো নিয়ন্ত্রণ করতে ডিসেম্বর থেকে জরিমানা কার্যকর করা হবে। প্রথমবার আইন ভঙ্গ করলে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে। দ্বিতীয়বার করলে আরও বেশি টাকা জরিমানা করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, জরিমানা কার্যকর করার আগে সব ধরনের গাড়ি চালক ও সাধারণ জনগণকে সচেতন করা হবে। হর্ন বাজানো দীর্ঘদিনের অভ্যাস তাই এটি পরিবর্তন করতে চাইলে প্রথমে মানুষকে সচেতন করতে হবে।

পরিবেশ উপদেষ্টা আরও বলেন, যানবাহনে অহেতুক হর্ন, যত্রতত্র সাউন্ড বক্স, মাইকের মাধ্যমে উচ্চ শব্দ সৃষ্টি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এসব মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করে।

তিনি বলেন, আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে অন্যান্য দূষণের পাশাপাশি শব্দদূষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার এখনই সময়। ক্ষতিকর দিকগুলো বিবেচনা করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইন ও বিধি বাস্তবায়ন ও অতিরিক্ত শব্দ করা থেকে বিরত থাকার সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে হবে।

রিজওয়ানা মনে করেন, হর্ন বাজানো ও শব্দদূষণ বন্ধ করতে সবচেয়ে জরুরি হলো সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা।

তিনি আরও বলেন, আমরা যদি নিজেকে সচেতন করি, প্রতিটি চালক তার এই পুরনো অভ্যাস বন্ধে প্রতিজ্ঞা করে তাহলে দ্রুত হর্ন বাজানো ও শব্দদূষণ বন্ধ করা যাবে। সেজন্য জরিমানা করার আগে আগামী কয়েকদিন ব্যাপক আকারে সচেতনতার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হবে।

চালকদের হর্ন না বাজাতে উৎসাহিত করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান পরিবেশ উপদেষ্টা।

তিনি জানান, লাইসেন্স নবায়নের শর্ত হিসেবে হর্ন বাজানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

এছাড়াও উপদেষ্টা বলেন, ঢাকায় যানবাহনের হর্নের কারণে মানুষের শ্রবণশক্তি কমছে। শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। এটি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও স্নায়ুরোগ সৃষ্টি করতে পারে।

শব্দদূষণের বিষয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, জনগণকে ব্যাপকভাবে বধির হওয়া থেকে রক্ষা করতে শব্দদূষণ বন্ধ করতেই হবে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পকে আরও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে নির্দশনা দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শব্দদূষণের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরে হর্ন ছাড়াও মাইকিং, বিজ্ঞাপন, কন্সট্রাকশনসহ বিভিন্নভাবে শব্দদূষণ হচ্ছে। হর্ন বন্ধ ছাড়াও সকল শব্দ বা সাউন্ড বন্ধ করা করতে হবে। নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়তে হলে আমাদের ‘কম শব্দযুক্ত’ দেশে থাকতে হবে।

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লাগামহীন নেতানিয়াহু: আস্থাহীন বাইডেন প্রশাসন

বাজবেনা আর হর্ন, শব্দদূষণ-মুক্ত হচ্ছে রাজধানী

আপডেট সময় : ০৪:১১:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪

রাজধানীতে যান চলাচলে নতুন নিয়ন্ত্রণ আসছে শীঘ্রই। চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকেই যানবাহনে হর্ন বাজানোর উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এবিষয়ে এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিশেষ বিভাগ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রথমে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে, এবং পর্যায়ক্রমে পুরো ঢাকা শহর এবং ধীরে ধীরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও শব্দদূষণ বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

হর্ন বাজানোর নিয়ন্ত্রণে বিধিতেও পরিবর্তন নিয়ে আসা হবে জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গণমাধ্যমকে জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে পরের বছরের শুরুতে পুরো ঢাকা শহরকে নীরব এলাকা করতে কর্মসূচি নেওয়া হবে। প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে, পরে পুরো ঢাকা শহর এবং ধীরে ধীরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও শব্দদূষণ বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

রিজওয়ানা বলেন, হর্ন বাজানোর দীর্ঘদিনের অভ্যাস পরিবর্তন করতে প্রথমে মানুষকে সচেতন করা প্রয়োজন। এরপর আইনের প্রয়োগ। হর্ন বাজানো নিয়ন্ত্রণ করতে ডিসেম্বর থেকে জরিমানা কার্যকর করা হবে। প্রথমবার আইন ভঙ্গ করলে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে। দ্বিতীয়বার করলে আরও বেশি টাকা জরিমানা করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, জরিমানা কার্যকর করার আগে সব ধরনের গাড়ি চালক ও সাধারণ জনগণকে সচেতন করা হবে। হর্ন বাজানো দীর্ঘদিনের অভ্যাস তাই এটি পরিবর্তন করতে চাইলে প্রথমে মানুষকে সচেতন করতে হবে।

পরিবেশ উপদেষ্টা আরও বলেন, যানবাহনে অহেতুক হর্ন, যত্রতত্র সাউন্ড বক্স, মাইকের মাধ্যমে উচ্চ শব্দ সৃষ্টি ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এসব মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করে।

তিনি বলেন, আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে অন্যান্য দূষণের পাশাপাশি শব্দদূষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার এখনই সময়। ক্ষতিকর দিকগুলো বিবেচনা করে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইন ও বিধি বাস্তবায়ন ও অতিরিক্ত শব্দ করা থেকে বিরত থাকার সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে হবে।

রিজওয়ানা মনে করেন, হর্ন বাজানো ও শব্দদূষণ বন্ধ করতে সবচেয়ে জরুরি হলো সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা।

তিনি আরও বলেন, আমরা যদি নিজেকে সচেতন করি, প্রতিটি চালক তার এই পুরনো অভ্যাস বন্ধে প্রতিজ্ঞা করে তাহলে দ্রুত হর্ন বাজানো ও শব্দদূষণ বন্ধ করা যাবে। সেজন্য জরিমানা করার আগে আগামী কয়েকদিন ব্যাপক আকারে সচেতনতার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হবে।

চালকদের হর্ন না বাজাতে উৎসাহিত করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান পরিবেশ উপদেষ্টা।

তিনি জানান, লাইসেন্স নবায়নের শর্ত হিসেবে হর্ন বাজানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

এছাড়াও উপদেষ্টা বলেন, ঢাকায় যানবাহনের হর্নের কারণে মানুষের শ্রবণশক্তি কমছে। শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। এটি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও স্নায়ুরোগ সৃষ্টি করতে পারে।

শব্দদূষণের বিষয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, জনগণকে ব্যাপকভাবে বধির হওয়া থেকে রক্ষা করতে শব্দদূষণ বন্ধ করতেই হবে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পকে আরও কার্যকরী ভূমিকা রাখতে নির্দশনা দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শব্দদূষণের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরে হর্ন ছাড়াও মাইকিং, বিজ্ঞাপন, কন্সট্রাকশনসহ বিভিন্নভাবে শব্দদূষণ হচ্ছে। হর্ন বন্ধ ছাড়াও সকল শব্দ বা সাউন্ড বন্ধ করা করতে হবে। নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়তে হলে আমাদের ‘কম শব্দযুক্ত’ দেশে থাকতে হবে।