ঢাকা ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ ::
আমাদের নিউজপোর্টালে আপনাকে স্বাগতম...

বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদকে ভেঙে দেওয়ার দাবি

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ)  বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ সদস্যরা। সাধারণ সদস্যদের পক্ষে ৭ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে। আজ শনিবার (৩১ আগস্ট) হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এক সংবাদে সম্মেলনের মাধ্যমে এসব দাবি জানানো হয়।

তাদের উত্থাপিত দাবিগুলো হচ্ছে— সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে দলীয় প্রভাবমুক্ত ২০ সদস্যের একটি অন্তবর্তীকালীন পরিচালনা বোর্ড গঠন; অন্তবর্তীকালীন পরিচালনা বোর্ড স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে অতি দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ; বিজিএমইএর অতীতের সব দুর্নীতির স্বচ্ছ ও সঠিক তদন্তের জন্য একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন; শেখ হাসিনার দোসর বিজিএমইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিইউএফটি) বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনসহ বর্তমান বোর্ড ভেঙে নতুন বোর্ড গঠন; বিগত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিজিএমইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিইউএফটি) নিহত মো. সেলিম তালুকদারসহ নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদান । প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, ১৬শ ভোটার রয়েছে । তারা বলছেন, ২ হাজার ৪৯৬ ভোটারের মধ্যে প্রায় ৭শ ভুয়া। যা বিগত নির্বাচনে সৃষ্টি করে সম্মিলিত পরিষদ। এছাড়া বিজিএমইএর বর্তমান পর্ষদ ঠিক রাখার জন্য নেতারা সেনাপ্রধান ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের শীর্ষ সংগঠন হচ্ছে বিজিএমইএ। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশই আসে এই পোশক শিল্প থেকে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রে এ সেক্টরের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এই সংগঠনটি দীর্ঘদিন যাবৎ একটি স্বার্থান্বেসী ও স্বেরাচারী শাসকের কতিপয় ব্যক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার কারণে এর স্বাভাবিক কার্যক্রম আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। গত ৯ মার্চ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ক্ষমতায় আসে। যা সাধারণ সদস্যদের মনের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে।ইনামুল হক খান বাবলু বলেন, বর্তমান বিজিএমইএ-এর পরিচালনা পর্ষদের পলাতক সভাপতি এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উক্ত পরিচালনা পর্ষদের অন্যান্য সদস্য তার আজ্ঞাবহ। বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে এস এম মান্নান কচি ও তার দলীয় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে সংগঠনটির ক্ষমতা দখল করেন। এই কাজে সাবেক সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী, মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, মো. খশরু চৌধুরী, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম নিজ বাহিনীসহ সরাসরি অংশ নেয়। সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশীও এর সঙ্গে জড়িত।

মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া বলেন, সর্বশেষ গত ৪ আগস্ট মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে বিজিএমইএ-এর পলাতক সভাপতি এস এম মান্নান কচি ও তার সহযাযোগীরা ছাত্র-জনতার ওপর ব্যাপক হামলা করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দমন-পীড়ন ও হত্যায় উত্তরা ও মিরপুরে বিজিএমইএ-এর পলাতক ও খুনি সভাপতির নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনী মূল ভূমিকা পালন করে। এটি সব গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনে কয়েকশত ছাত্র-জনতা নিহত হওয়ার পরও বিজিএমইএ বর্তমান বোর্ড ও সভাপতি কোনো শোকবার্তা দেয়নি। ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলন ও গণজোয়ারে বিজিএমইএ সভাপতি ও তার বোর্ড সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী ভূমিকা পালন করায় তারা দায়িত্ব পালনের নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন। বিগত সংকটে কারখানা খোলা নিয়ে সংগঠনটির কোনো সঠিক নির্দেশনা ছিল না এবং গত কয়েক সপ্তাহে বিজিএমইএ পর্ষদ ব্যবসা পরিচালনায় কার্যকর কোনো নির্দেশনা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার কারণে আমাদের ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতি ও চরম ভোগান্তির শিকার হন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অনন্ত গার্মেন্টসের ব্যবস্থপনা পরিচালক ইনামুল হক খান বাবলু, মাইশা ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া, অ্যাপরেলস পার্ক লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ প্রমুখ।

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লাগামহীন নেতানিয়াহু: আস্থাহীন বাইডেন প্রশাসন

বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদকে ভেঙে দেওয়ার দাবি

আপডেট সময় : ০৭:২৫:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ)  বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ সদস্যরা। সাধারণ সদস্যদের পক্ষে ৭ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে। আজ শনিবার (৩১ আগস্ট) হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এক সংবাদে সম্মেলনের মাধ্যমে এসব দাবি জানানো হয়।

তাদের উত্থাপিত দাবিগুলো হচ্ছে— সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে দলীয় প্রভাবমুক্ত ২০ সদস্যের একটি অন্তবর্তীকালীন পরিচালনা বোর্ড গঠন; অন্তবর্তীকালীন পরিচালনা বোর্ড স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে অতি দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ; বিজিএমইএর অতীতের সব দুর্নীতির স্বচ্ছ ও সঠিক তদন্তের জন্য একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন; শেখ হাসিনার দোসর বিজিএমইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিইউএফটি) বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনসহ বর্তমান বোর্ড ভেঙে নতুন বোর্ড গঠন; বিগত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিজিএমইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিইউএফটি) নিহত মো. সেলিম তালুকদারসহ নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ প্রদান । প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, ১৬শ ভোটার রয়েছে । তারা বলছেন, ২ হাজার ৪৯৬ ভোটারের মধ্যে প্রায় ৭শ ভুয়া। যা বিগত নির্বাচনে সৃষ্টি করে সম্মিলিত পরিষদ। এছাড়া বিজিএমইএর বর্তমান পর্ষদ ঠিক রাখার জন্য নেতারা সেনাপ্রধান ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের শীর্ষ সংগঠন হচ্ছে বিজিএমইএ। দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশই আসে এই পোশক শিল্প থেকে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রে এ সেক্টরের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এই সংগঠনটি দীর্ঘদিন যাবৎ একটি স্বার্থান্বেসী ও স্বেরাচারী শাসকের কতিপয় ব্যক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার কারণে এর স্বাভাবিক কার্যক্রম আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। গত ৯ মার্চ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ক্ষমতায় আসে। যা সাধারণ সদস্যদের মনের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে।ইনামুল হক খান বাবলু বলেন, বর্তমান বিজিএমইএ-এর পরিচালনা পর্ষদের পলাতক সভাপতি এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উক্ত পরিচালনা পর্ষদের অন্যান্য সদস্য তার আজ্ঞাবহ। বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে এস এম মান্নান কচি ও তার দলীয় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে সংগঠনটির ক্ষমতা দখল করেন। এই কাজে সাবেক সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদী, মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, মো. খশরু চৌধুরী, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম নিজ বাহিনীসহ সরাসরি অংশ নেয়। সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশীও এর সঙ্গে জড়িত।

মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া বলেন, সর্বশেষ গত ৪ আগস্ট মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে বিজিএমইএ-এর পলাতক সভাপতি এস এম মান্নান কচি ও তার সহযাযোগীরা ছাত্র-জনতার ওপর ব্যাপক হামলা করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দমন-পীড়ন ও হত্যায় উত্তরা ও মিরপুরে বিজিএমইএ-এর পলাতক ও খুনি সভাপতির নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনী মূল ভূমিকা পালন করে। এটি সব গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনে কয়েকশত ছাত্র-জনতা নিহত হওয়ার পরও বিজিএমইএ বর্তমান বোর্ড ও সভাপতি কোনো শোকবার্তা দেয়নি। ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলন ও গণজোয়ারে বিজিএমইএ সভাপতি ও তার বোর্ড সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী ভূমিকা পালন করায় তারা দায়িত্ব পালনের নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন। বিগত সংকটে কারখানা খোলা নিয়ে সংগঠনটির কোনো সঠিক নির্দেশনা ছিল না এবং গত কয়েক সপ্তাহে বিজিএমইএ পর্ষদ ব্যবসা পরিচালনায় কার্যকর কোনো নির্দেশনা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার কারণে আমাদের ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতি ও চরম ভোগান্তির শিকার হন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অনন্ত গার্মেন্টসের ব্যবস্থপনা পরিচালক ইনামুল হক খান বাবলু, মাইশা ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া, অ্যাপরেলস পার্ক লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ প্রমুখ।