জুলাইয়ের শেষে যখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দেশজুড়ে দানা বেঁধে উঠেছে, তখন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পরাজয় অত্যাসন্ন বুঝতে পেরে ২৯ জুলাই ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক আহ্বান করে। ওই বৈঠকে, কোটা সংস্কার আন্দোলন মূল এজেন্ডা হিসাবে স্থান পায়। একই সঙ্গে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়।
কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন তখন তুঙ্গে। সেই আন্দোলনের প্রতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ বাড়তে শুরু করে। আন্দোলন দমাতে সরকারি কোনো কৌশলই কাজে আসছিল না। এমনই পটভূমিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ দলীয় নেতাদের সঙ্গে ওই বৈঠকে বসেন।
এদিকে, জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে সকলে একমত হলেও, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সৃষ্ট দেশজুড়ে দাবানল নিয়ন্ত্রণের পরামর্শের প্রশ্নে ভিন্ন ভিন্ন মত দেখা দেয়। তবে দু’একজন ছাড়া সকলেই বিভিন্ন ভাবে আন্দোলন দমনের পরামর্শ দেন।
জানা যায়,১৯ জুলাই গণভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে নেতারা বিভক্ত হয়ে পড়েন। বামঘেঁষা দু’জন নেতা বলেন, ছাত্রদের এই আন্দোলন মার্কিন ষড়যন্ত্র। তাই এটাকে গুঁড়িয়ে দিতে হবে। দেশব্যাপী সেনা মোতায়েন ও কারফিউ জারি করতে হবে। বাকিদের বেশিরভাগই রাজনৈতিকভাবে সমাধানের পথ খুঁজতে পরামর্শ দেন। কেউ কেউ আলোচনার কথাও বলেন।
তখন পাশের রুমে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা অপেক্ষা করছিলেন। শেখ হাসিনা হার্ডলাইনে যাওয়ার পক্ষেই মত দেন। বলেন, আর পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। এখানেই শেষ করে দিতে হবে। দেশব্যাপী কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত দেন। যেখানেই মিছিল সেখানেই গুলি করার নির্দেশনাও আসে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আপনাদের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব দেখছি। তখনই সেনা মোতায়েন ও কারফিউ জারির সিদ্ধান্ত হয়।