ঢাকা ০৩:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ ::
আমাদের নিউজপোর্টালে আপনাকে স্বাগতম...

নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন বাংলাদেশের জনগণের পাশে না থেকে ভুল করেছে : মার্কিন কূটনীতিক

ফাইল ছবি

সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি চিফ অব মিশন জন ড্যানিলোভিজের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনকে নমনীয়তা দেখাতে হবে এবং স্বীকার করতে হবে, তারা বাংলাদেশের জনগণ ও তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার পাশে না থেকে ভুল করেছে।’

‘যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে গিয়ে এই অঞ্চলে নিজেদের স্বার্থের প্রতি মনোযোগ কমিয়ে দিয়েছে। তবে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা করা ভুল ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ওয়াশিংটন পোস্টের ওই প্রতিবেদনে মার্কিন ও ভারতীয় কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়তে থাকায়, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশ ইস্যুতে শিথিলতা প্রদর্শন করার জন্য চাপ দিয়েছিল ভারত।

ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, একের পর এক বৈঠকে ভারতীয় কর্মকর্তারা দাবি করেন যে বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেন তাদের গণতন্ত্রপন্থী বক্তব্য কমিয়ে দেয়। যদি একটি উন্মুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে বিরোধীরা ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশ ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হবে। এটি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দেবে বলে দাবি করেন ভারতীয় কর্মকর্তারা।

ভারতীয় সরকারের একজন উপদেষ্টা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, আপনারা বিষয়টি গণতন্ত্রের দিক থেকে দেখবেন। তবে আমাদের জন্য এসব ইস্যু অনেক অনেক বেশি গুরুতর এবং অস্তিত্বের।

তিনি বলেন, আমেরিকানদের সঙ্গে আমাদের অনেক আলোচনা হয়েছে। সেখানে আমরা বলেছিলাম, এটি আমাদের জন্য একটি মূল উদ্বেগের বিষয়। আমাদের মধ্যে কোনো ধরনের কৌশলগত ঐক্যমত্য না থাকলে আপনি আমাদের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে নিতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের অনেকে হতাশ হন। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তারা হিসাব-নিকাষ করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে ভারতীয় চাপের খুব একটা সম্পর্ক নেই।

এদিকে চলতি বছরের শুরুরদিকে নির্বাচন পরবর্তী বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কি হবে সে বিষয়ে দেশটির কূটনীতিক মহলে মতানৈক্যের তথ্যও উঠে এসেছে ওই প্রতিবেদনে।

জানাযায়, তৎকালীন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার পক্ষে যুক্তি দেন। তবে কিছু মার্কিন কর্মকর্তা মনে করতেন, শেখ হাসিনাকে বিচ্ছিন্ন করা খুব একটা লাভজনক হবে না। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ নিয়ে সুর নরম করে বাইডেন প্রশাসন। এমনকি হাসিনা সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি স্থগিত করে।

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসরায়েল ‘সম্পর্কে কৌশলি’ যুক্তরাষ্ট্র: বড় হুমকির মুখে মধ্যপ্রাচ্যের বেসামরিক নিরাপত্তা

নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন বাংলাদেশের জনগণের পাশে না থেকে ভুল করেছে : মার্কিন কূটনীতিক

আপডেট সময় : ১০:৪৩:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৪

সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি চিফ অব মিশন জন ড্যানিলোভিজের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনকে নমনীয়তা দেখাতে হবে এবং স্বীকার করতে হবে, তারা বাংলাদেশের জনগণ ও তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার পাশে না থেকে ভুল করেছে।’

‘যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে গিয়ে এই অঞ্চলে নিজেদের স্বার্থের প্রতি মনোযোগ কমিয়ে দিয়েছে। তবে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা করা ভুল ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ওয়াশিংটন পোস্টের ওই প্রতিবেদনে মার্কিন ও ভারতীয় কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়তে থাকায়, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশ ইস্যুতে শিথিলতা প্রদর্শন করার জন্য চাপ দিয়েছিল ভারত।

ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, একের পর এক বৈঠকে ভারতীয় কর্মকর্তারা দাবি করেন যে বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেন তাদের গণতন্ত্রপন্থী বক্তব্য কমিয়ে দেয়। যদি একটি উন্মুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে বিরোধীরা ক্ষমতায় আসে তাহলে বাংলাদেশ ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর প্রজননক্ষেত্রে পরিণত হবে। এটি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দেবে বলে দাবি করেন ভারতীয় কর্মকর্তারা।

ভারতীয় সরকারের একজন উপদেষ্টা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, আপনারা বিষয়টি গণতন্ত্রের দিক থেকে দেখবেন। তবে আমাদের জন্য এসব ইস্যু অনেক অনেক বেশি গুরুতর এবং অস্তিত্বের।

তিনি বলেন, আমেরিকানদের সঙ্গে আমাদের অনেক আলোচনা হয়েছে। সেখানে আমরা বলেছিলাম, এটি আমাদের জন্য একটি মূল উদ্বেগের বিষয়। আমাদের মধ্যে কোনো ধরনের কৌশলগত ঐক্যমত্য না থাকলে আপনি আমাদের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে নিতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের অনেকে হতাশ হন। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তারা হিসাব-নিকাষ করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এতে ভারতীয় চাপের খুব একটা সম্পর্ক নেই।

এদিকে চলতি বছরের শুরুরদিকে নির্বাচন পরবর্তী বাংলাদেশের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কি হবে সে বিষয়ে দেশটির কূটনীতিক মহলে মতানৈক্যের তথ্যও উঠে এসেছে ওই প্রতিবেদনে।

জানাযায়, তৎকালীন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার পক্ষে যুক্তি দেন। তবে কিছু মার্কিন কর্মকর্তা মনে করতেন, শেখ হাসিনাকে বিচ্ছিন্ন করা খুব একটা লাভজনক হবে না। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ নিয়ে সুর নরম করে বাইডেন প্রশাসন। এমনকি হাসিনা সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি স্থগিত করে।