বাংলাদেশের চলমান শঙ্কটে জাতিসংঘ অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং তাদের গৃহীত অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমৃদ্ধ গণতন্ত্র’ অর্জনের সকল সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সরকারের যে কোনো প্রয়োজনে জাতিসংঘ সমর্থন ও সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এসব বিষয়াবলীর আলোকপাত করে বলেছেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমৃদ্ধ গণতন্ত্র’ অর্জনে তার (অন্তর্বর্তীকালীন) সরকারের প্রচেষ্টার প্রতি জাতিসংঘের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
গতকাল সোমবার (১৯ আগস্ট) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত ওই চিঠিতে, বাংলাদেশ তার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে রয়েছে উল্লেখ করে গুতেরেস বলেছেন, এই ক্রান্তিকালীন সময়ে সহিংসতার অবসান, জবাবদিহিতা নিশ্চিত এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথ নির্ধারণে ড. ইউনূসের নেতৃত্ব হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘ অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে এবং বাংলাদেশের জনগণের সুবিধার্থে আবাসিক সমন্বয়কারী ও জাতিসংঘ কান্ট্রি টিমের মাধ্যমে সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গত ১৬ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো চিঠিতে আন্তোনিও গুতেরেস একথা জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব ওই চিঠিতে বলেছেন, “জাতিসংঘ ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে কাজ করতে এবং অনুরোধ পেলে যেকোনও সমর্থন দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ”। বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে আবাসিক সমন্বয়কারী এবং জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমের মাধ্যমে এই অনুরোধ করা যেতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জানাগেছে, চিঠিতে জাতিসংঘ প্রধান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য তাকে তার শুভেচ্ছা জানান। গুতেরেস বলেন, বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে আমি স্বাগত জানাই।
জাতিসংঘ প্রধান আরো বলেন, এই ক্রান্তিকালীন সময়ে সহিংসতার অবসান ঘটাতে, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে, আইন-শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করতে এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথ নির্ধারণে ড. ইউনূসের নেতৃত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
চিঠিতে গুতেরেস দেশের সর্বস্তরের যুবক ও নারীদের পাশাপাশি সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের কথা বিবেচনা করার অনুরোধ জানান। সেই সঙ্গে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে জোর দেওয়ার আহব্বান জানান তিনি।